১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কিত আজকের ব্লগ পোস্টে আপনাকে
স্বাগতম।আজকের দ্রুত বিশ্বায়নের যুগে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখাটা সবচাইতে বড়
চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন ওজন বৃদ্ধি হওয়া বেড়ে যাওয়ার আসল
কারণ হচ্ছে ভুলভাল খাদ্য অভ্যাস বা অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস এবং সঠিক সময়ে
প্রতিদিন ব্যায়াম না করা।
এছাড়াও আমাদের প্রতিদিনের বসে থাকা একঘেয়েমি জীবন ধারা এবং মানসিক চাপ এসবও
রয়েছে দ্রুত ওজন বৃদ্ধির কারণ হিসাবে। আপনি জেনে হয়তো অবাক হবেন যে আজকাল
অনেকেই ওজন বৃদ্ধির সাথে লড়াই করছে। আপনিও যদি তেমন একজন হয়ে থাকেন তবে আজকের
ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য। আজকের এই ব্লগ পোস্টে এমন একটি ডায়েট চার্ট দেওয়ার
চেষ্টা করব যা সঠিকভাবে মেনে চললে ১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানো সম্ভব।
পোস্টের সূচিপত্রঃ ১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায়
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় কি আসলেই আছে ? শরীরের অতিরিক্ত ওজন যেমন কখনোই
স্বাস্থ্যসম্মত নয় তেমনি দ্রুত ওজন কমানো কখনোই স্বাস্থ্যসম্মত হবে না এমনকি
শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আসতে পারে। আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে
চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমাতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে খাদ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে ও শারীরিক পরিশ্রম এবং সঠিক
জীবন যাপনের কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন কম হাইড্রেড ও বেশি
প্রোটিনযুক্ত খাবার খেতে হবে ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার এবং চিনি এড়িয়ে
চলতে হবে। অপরদিকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং প্রতিদিন
অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে বা হালকা ব্যায়াম করতে হবে।
এছাড়াও আপনাকে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। তবে দ্রুত ওজন কমানোর
চেষ্টা না করে কোন একজন ভালো পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ধীরে
ধীরে ওজন কমানোই বেশি উপকারী হবে। মনে রাখবেন দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা করা কখনোই
বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এতে হিতে বিপরীতও হতে পারে।
আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে নারী কিংবা পুরুষ তার শরীরের ওজন বয়স উচ্চতা
অনুযায়ী প্রতিদিনের খাবারের পরিমাণ ধরন সময়ও কিন্তু পরিবর্তন করতে হবে। খাবারের
সময়টা এমন হবে যেমন ধরুন সকাল আটটা দশটা বারোটা দুইটা চারটা ছয়টা রাত আটটা রাত
দশটা এরকম অর্থাৎ প্রতি দুই ঘন্টা পর পর কিছু একটা খেতে হবে। ওজন কমাতে গিয়ে
একটানা না খেয়ে দুর্বল কোন অসুস্থ হয়ে গেলে কোন কাজই হবে না।
তাই আপনি যদি দুই ঘন্টা পর পর হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে আপনার শরীর
কর্মক্ষম থাকবে। তবে অবশ্যই এ সময়টা আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। আবার
আপনাকে ব্যায়ামে অভ্যস্ত হতে হবে। ব্যায়াম করা যদি আপনার কাছে কষ্টসাধ্য হয়ে
থাকে তবে একটানা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট যদি আপনি হাঁটতে থাকেন তাহলে এটাও আপনার
ব্যায়ামের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
তাই আপনি যথাসাধ্য চেষ্টা করুন অন্তত নিয়মিত হাটার এবং সুষম খাদ্য অভ্যাস গড়ে
তোলার একই সাথে দুই ঘন্টা পর পর হালকা খাবার খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান
করুন। নিচে আপনাদের জন্য প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর একটি খাবার তালিকা দেখানো হয়েছে
আশা করা যায় এই খাবার তালিকা যদি আপনি অক্ষর অক্ষরে পালন করেন তবে আপনি ১৫ দিনে
৫ কেজি ওজন কমাতে পারবেন।
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
- সকাল ৮:০০ টায় খাবেন সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ বা কুসুম ছাড়া ডিমের সাদা অংশ দিয়ে তৈরি করা স্যুপ অথবা সবজি ও ডিমের সাদা অংশ দিয়ে তৈরি করা স্যুপ।
- সকাল ১০:০০ টায় খাবেন টক দই দিয়ে তৈরি করা লাচ্ছি। টক দইয়ে রয়েছে প্রোবায়োটিক উপাদান এই উপাদান পেটের খেয়াল রাখতে শক্তি ধারন উপকারী এছাড়াও টক দইয়ে থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি আপনার হজমের গোলমালকে দূরে রাখে।
- দুপুর ১২:০০ টায় খাবেন ফলের জুস। যেমন আপেল তরমুজ পেঁপে বা গাজর এর জুস আপনার ওজন কমাতে অনেকটাই সাহায্য করবে একই সাথে আপনার প্রয়োজনীয় শরীরের পুষ্টি উপাদানও যোগাবে। তবে বিটরুট ফলের জুস খেতে পারলে আরো তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে পারবেন।
- দুপুর ২:০০ দিকে খাবেন সবজি এবং মুরগি দিয়ে তৈরি করা স্যুপ। সুপ কিভাবে তৈরি করে সেটা যদি জানা না থাকে তবে ইউটিউব বা গুগলে সার্চ দিলে বিভিন্ন রকম সুপের রেসিপি পাওয়া যাবে আবার বাজারে স্যুপের প্যাকেট কিনতে পাওয়া যায় আপনি চাইলে সেগুলো খেতে পারেন।
- বিকেল ৪:০০ খাবেন ননী বিহীন এক গ্লাস দুধ। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম প্রোটিন ভিটামিন ডি এগুলো আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পুষ্টি যোগাবে। ফলে আপনি সহজেই দুর্বল হয়ে যাবেন না এবং কর্মক্ষম থাকবেন।
- সন্ধ্যা ৬:০০ সময় খাবেন সিদ্ধ আটার রুটি কিংবা রায়তা। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে রোজ এক বাটি রায়তা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক পুষ্টিবিদরা। রায়তা হচ্ছে টক দিয়ে তৈরি এক ধরনের খাবার যা আপনার ওজন কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
- রাত ৮:০০ খাবেন সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ বা কুসুম ছাড়া ডিমের সাদা অংশ দিয়ে তৈরি করা স্যুপ অথবা সবজি ও ডিমের সাদা অংশ দিয়ে তৈরি করা স্যুপ।
- রাত ১০:০০ টায় খাবেন ফলের জুস। যেমন আপেল তরমুজ পেঁপে বা গাজর এর জুস আপনার ওজন কমাতে অনেকটাই সাহায্য করবে একই সাথে আপনার প্রয়োজনীয় শরীরের পুষ্টি উপাদানও যোগাবে।
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন যেভাবে কমাবেন
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসাবে কিছু ম্যাজিকাল টিপস এন্ড ট্রিকস
আপনাদের কাছে তুলে ধরছি যা আপনার ওজন কমানোর জন্য জাদুর মত কাজ
করবে।
- সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করুনঃ ১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর প্রথম ধাপ হচ্ছে সুষম খাদ্য তালিকা তৈরি করা এবং সে অনুযায়ী খাদ্য অভ্যাস তৈরি করা। সুষম খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন শাকসবজি ফলমূল এবং হোল গ্রেইন যুক্ত খাবার। প্রোটিন যুক্ত খাবার এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরে রাখে এবং ক্ষুধাকে দমিয়ে রাখে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনঃ শরীরের অতিরিক্ত ওজনকে কমানোর জন্য পানি পান করা খুবই জরুরী। পানি দেহের ভিতরে থাকা বিষাক্ত টক্সিন পদার্থকে বের করে দেয় এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। চেষ্টা করবেন খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে পানি পান করার এতে করে আপনার ক্ষুধা কমে যাবে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার চাহিদা কমে যাবে ।
- চিনি যুক্ত খাবার ও সফট ড্রিংকস বাদ দিনঃ ওজন বৃদ্ধি হওয়ার প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে চিনি যুক্ত খাবার গ্রহণ করা এবং সফট ড্রিঙ্কস পান করা। এগুলো উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হয় এবং শরীরের চর্বির পরিমাণ কে বাড়িয়ে দেয়।
- অল্প পরিমাণের খাবার কয়েক ঘন্টা পর পর খানঃ প্রতিদিন অল্প অল্প করে পাঁচ থেকে ছয় বার প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান। এভাবে আপনি খাওয়ার অভ্যাস করলে আপনি ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন যা আপনার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার চাহিদাকে প্রশমিত করবে।
- গ্রিন টি পান করুনঃ গ্রিন টিয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মেটাবলিজম কে বাড়াই এবং ফ্যাটকে বার্ন করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ গ্রিন টি পান করার চেষ্টা করুন।
- প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করুনঃ ওজন কমানোর জন্য শারীরিক ব্যায়াম অতীব জরুরি বিষয়। কঠিন কঠিন ব্যায়াম গুলো করতে না পারলেও অন্তত প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা দৌড়ানো সাইকেল চালানো বা যোগব্যায়াম ইত্যাদি করতে পারেন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খানঃ শাক সবজি ও ফলমূল থাকা ফাইবার এবং ভিটামিন -এ ,সি এবং কে আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করবে এবং দেহের অন্যান্য পুষ্টিগণের চাহিদা পূরণ করবে। শাকসবজি ফলমূল খেলে পেট অধিক সময় ভরা থাকে ফলে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করার চাহিদা কমে যায়।
অতিরিক্ত ওজন কমানোর গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- ডায়েট চলাকালীন সময়ে লোভনীয় খাবার এড়িয়ে চলুন অর্থাৎ এমন কিছু খাবার রয়েছে যে খাবার প্রতি আপনি দুর্বল সে খাবারগুলোর সামনে ভুল করেও যাবেন না।
- চা বা কফির পরিবর্তে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস করুন এতে করে আপনার অতিরিক্ত ওজন কমে যাবে। এছাড়াও খালি পেটে গ্রিন টি পান করা ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ও দূর হবে।
- প্রতিদিনই হাঁটুন বা দৌড়াদৌড়ি করার অভ্যাস তৈরি করুন এবং হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
- আপনার প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এমন সব ফল রাখুন যেগুলোতে কম ক্যালোরি এবং প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে যেমন তরমুজ,শসা,পেঁপে, বাঙ্গি, নাশপাতি ইত্যাদি।
- তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর আশায় এক বেলা না খেয়ে থাকবেন না। এই কাজটি করলে আপনার যেমনটা হবে, ধরুন আপনি সকালে না খেয়ে থাকলেন কিন্তু দুপুরে আপনার প্রচুর ক্ষুধা পাবে তখন আপনি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলবেন অর্থাৎ দ্বিগুণ পরিমাণ খাওয়া হয়ে যাবে তাই যা খাবেন অল্প পরিমানে খাবেন কিন্তু কয়েকবারে খাবেন।
অতিরিক্ত ওজন যে কারনে ভয়ানক
- হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়ঃ শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত চর্বি জমা ফলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি হয়। এই অতিরিক চড়বে আমাদের রক্তনালীর মাধ্যমে রক্ত সঞ্চল নিয়ে বাধা তৈরি করে। যা হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোকের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
- শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি করেঃ শরীরের অতিরিক্ত ওজন আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত জন আমাদের ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি করে হলে বুকের প্রাচীর ভারি হয়ে যায়। রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইড বেড়ে যায় এবং অক্সিজেন পরিমান কমে যায় যা শ্বাসকষ্টকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
- উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়ঃ অতিরিক্ত ওজনের কারনে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। তাই রক্তচাপ কমাতে ডায়েট থেকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বাদ দেওয়া উচিত। শরীরে বেশি চর্বি থাকলে রক্তনালীর মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনের জন্য বেশি চাপ সৃষ্টি হয় এবং হার্টের কার্যকারিতা কে বাড়িয়ে দেয়।তাই উচ্চ রক্তচাপ থেকে বাঁচতে অবশ্যই আপনাকে অতিরিক্ত ওজন পরিহার করতে হবে।
- ডায়াবেটিস বেড়ে যায়ঃ টাইপ -২ ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ওজন এবং স্থলতা। দেহের অতিরিক্ত ওজন কোষগুলোকে ইন্সুলিনের প্রতি কম সেনসিটিভ করে তুলে যা ইনসুলিন প্রতিরোধের সৃষ্টি করে। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
- শক্তি বা আক্টিভিটি কমে যাওয়াঃ বেশি ওজনের দেহকে নড়াচড়া করতে বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। তখন নিজের কাছে নিজের দেহকেই বোঝা মনে হয়। হলে আমাদের যেরকম শক্তির অপচয় হয় একইভাবে আমাদের কার্যক্ষমতাও কমে যায়।
- হাড় ও লিগমেন্টে খারাপ প্রভাব পড়েঃ দেহের অতিরিক্ত ওজন আমাদের হাড় এবং জয়েন্টের উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে বিশেষ করে হাঁটু এবং মেরুদন্ডের উপর। ফলস্বরূপ হাড় ও লিগমেন্টে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করে।
আরো পড়ুনঃ
আরবী মাসের ক্যালেন্ডার-২০২৬ সাল
ওজন কমানোর ভেষজ উপাদান
প্রাকৃতিক ভাবে এমন কিছু জিনিস পাওয়া যায় যার দ্বারা ক্ষুধাকে
নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন মেথি গোলমরিচ সজনে গাছের পাতা দারচিনি মেথি
রসুন ইত্যাদি। নিচে আমরা এগুলো প্রত্যেকটির ব্যবহার সম্পর্কে জানব এবং
তা কিভাবে ওজন কমায় সে বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।
- দারুচিনি: দারুচিনি বিপাকক্রিয়া বাড়াতে এবং রক্তে সরকারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। একই সাথে এল ডি এল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এক থেকে দেড় চা চামচ দারুচিনির গুড়া একটি গ্লাসে সারারাত ভিজিয়ে রেখে প্রতিদিন সকালে পান করুন। কাঙ্খিত ফলাফল পেতে অন্তত এক মাস একটানা পান করুন।
- রসুন: রসুন বিপাকক্রিয়াকে বৃদ্ধি,করে চর্বি জমা রোধ করে শরীরের ওজন কমাতে অবদান রাখে। প্রথমে এক টুকরো রসুন নিয়ে ভালোভাবে বেটে নিন এরপর এতে হাফ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ছেঁকে নিন এরপর এক কাপ পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
- গোলমরিচ: দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন ০৫ টি (পাঁচটি ) করে চিবিয়ে খান। আরেকটি উপায়ে গোলমরিচ খেতে পারেন সেটি হচ্ছে এক কাপ গরম পানিতে এক চামচের চার ভাগের এক ভাগ পরিমাণ গোলমরিচের সাথে মধু যোগ করে। গোলমরিচ ফ্যাট কোষ তৈরিতে বাধা প্রদান করে।
- মেথি: মেথিকে ওজন কমানোর আদর্শ উপাদান বলতে পারেন কারণ এটি কোলেস্টেরল কমায় হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং ইনসুলিন তৈরির সমস্যা কে দূর করে। এক চা চামচ মেথি সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে এই মেথি ভেজানো পানি খালি পেটে নিয়মিত পান করলে দ্রুত ওজন কমবে।
বাড়তি ওজন কমানোর রেসিপি
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় হিসাবে কিছু রেসিপি রয়েছে যা
পানীয় আকারে পান করলে আশা করা যায় আপনি আপনার কাঙ্খিত ফলাফল
পাবেন। পানীয় তৈরি করার জন্য এক লিটার পরিমাণ পানি ফুটিয়ে তাতে
তিন চা চামচ জিরা ও দুইটা দারুচিনি দিয়ে দিন। এরপর পাঁচ থেকে দশ
মিনিট ফুটিয়ে পানি ছেকে গ্লাসে ঢেলে তাতে কিছুটা মধু ও লেবুর রস
মিশিয়ে নিন। ব্যাস ঝটপট তৈরি হয়ে গেল আপনার ওজন কমানোর রেসিপি।
এছাড়াও আদা ও লেবু দিয়ে আরেকটি রেসিপি আপনি বানাতে পারেন। একটি
লেবুকে চিপে রস বের করে নিন একই সাথে এক টুকরো পরিমাণ আদা খোসা
ছাড়িয়ে সেটাকে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন এরপর চুলায় ১ লিটার
পরিমাণ পানি নিয়ে এর মধ্যে লেবুর রস এবং এক চা চামচ আদা বাটা
দিয়ে দিন। সাথে যোগ করতে পারেন কয়েকটি গোলমরিচ এবং এক টুকরো
দারচিনি। এরপর পরিমাণ মতো জ্বাল দিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন এবং
ছেঁকে নিন। এ পানীয় প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন।
আরো পড়ুনঃ
হার্টের জন্য কোন ফল উপকারী
শরীরের ওজন কেন বাড়ে
অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া কিংবা হরমোন জনিত কারণে অথবা বংশগত কারণে
ওজন বাড়ে কিন্তু এসব কারণের বাইরে ও আরো অনেক কিছু কারণ রয়েছে যা
আপনার ওজনকে বৃদ্ধি করে। আবার এমন কিছু কারণ রয়েছে যা আপনার দেহের
ওজন বাড়াতে পারে কিন্তু অজানা রয়েছে তাই এখন আপনাদেরকে সে
সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।
উপরোক্ত কারণের বাইরেও যে সকল বিষয়গুলো ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী
সেগুলো হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া। ঘুম না হলে শরীরে
বায়োকেমিক্যাল অনেক উপাদানগত পরিবর্তন দেখা দেয় এতে আপনার শরীরে
মেদ জমে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও অবসাদ বা মানসিক চাপের কারণেও
আমাদের দেহের ওজন বাড়তে পারে। আমরা কমবেশি সকলেই মানসিক চাপে থাকি।
মানসিক চাপের সময় করটিসল নামক হরমোন নির্গত হয় যা ক্ষুধাকে
বৃদ্ধি করে। এই হরমোনের ফলে দেহে মেদ জমতে শুরু কর ফলস্বরূপ ওজন
বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি জাতীয়
খাবার গ্রহণ করা ও বাড়তি ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা। অতিরিক্ত
ক্যালরি বার্ন না করা বা সঞ্চিত ক্যালরি খরচ না করা। অতিরিক্ত
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ করা। মেয়েদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের গরম
মিল ও মেনোপজের সমস্যা। একটি নির্দিষ্ট বয়সে এসে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে
যাওয়াকে মেনোপজের বলা হয়।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কিত আর্টিকেলটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যর জন্য। এটি কোন ওষুধ বা চিকিৎসার অংশ নয়। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তথ্য ব্যবহারজনিত কোন ক্ষতির জন্য লেখক বা ওয়েবসাইট কোনভাবেই দায়ী নয়।
লেখকের শেষকথাঃ
১৫ দিনে ৫ কেজি ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কিত এই পোস্টে বিভিন্ন রকম
তথ্য সংগ্রহ করে এবং তা সংযোজন করে ওজন কমানোর আদর্শ উপায়
গুলো তুলে ধরেছি। আশা করছি এই পোস্টটি আপনারা মনোযোগ দিয়ে পড়লে এবং
যথাযথভাবে অনুসরণ করলে আপনারা আপনাদের কাঙ্খিত সাফল্যে পৌঁছাতে
পারবেন । আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তবে
আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এবং কোন
মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
সর্বশেষ একটি কথা বলে রাখি আপনি আপনার নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকবেন
অর্থাৎ ওজন কমানোর যে টার্গেট নিয়ে আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন তা থেকে কখনো
পিছুপা হবেন না। আমরা অনেকেই আছি কয়েকদিন ওজন কমানোর চেষ্টা করে হাল
ছেড়ে দেই । ভাবি যে আমার দ্বারা ওজন কমানো সম্ভব না কিন্তু আপনি মনে
রাখবেন আপনার দ্বারাই ওজন কমানো সম্ভব। আপনার ওজন যেমন একদিনে বেড়ে
যায়নি তেমনি ভাবে আপনার ওজন একদিনে কমে যাবে না তাই লেগে থাকুন।


ব্লগ টু বাজারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url