ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটিতে আপনাদের স্বাগতম। আপনারা অনেকে হয়তো ভাতের মাড় বা ফ্যানকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে ফেলে দেয় কিন্তু এর কিছু সুন্দর ব্যবহার পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো জানলে আপনি এর দ্বারা উপকৃত হতে পারবেন আবার এর কিছু খারাপ দিকও  রয়েছে যেগুলো না জানলে আপনি ক্ষতির মধ্যেও পড়তে পারেন।

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা

তাই ভাতের মাড় সম্পর্কিত অজানা সব তথ্য নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। প্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলটিতে আপনারা জানতে পারবেন ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক কি কি রয়েছে এবং এর উপকারিতা এবং ভাতের মাড়ের ব্যবহার সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক

আমরা কমবেশি সকলেই জানি যে ভাতের মাড়ে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাই বলে এই ভাতের মাড় যত ইচ্ছা তত খেতে পারেন না কারণ কোন কিছুরই অতিরিক্ত ভালো না। অতিরিক্ত ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে কিছু স্বাস্থ্য ঝুকি রয়েছে যা জেনে রাখা প্রত্যেকেই জন্য জরুরি। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি রয়েছে। 
  • চর্বি বৃদ্ধি পেতে পারে: অতিরিক্ত ভাতের মার খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে চর্বি বৃদ্ধি পেতে পারে তাই যারা মেদ বাড়ার শঙ্কাই রয়েছেন তারা ভাতের মাড় থেকে দূরে থাকবেন।
  • অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া: অতিরিক্ত ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে আমরা ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।ভাতের মাড়ে তুলনামূলকভাবে ক্যালরি বেশি থাকে। তাই এটি নিয়মিতভাবে বেশী খেলে ওজন বাড়ান ঝুঁকি রয়েছে।
  • ডায়রিয়া সমস্যা: কারো ডায়রিয়া হলে ভাতের মাড় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ ভাতের মাড় খাওয়ার কারণে ডায়রিয়াও হতে পারে।
  • বদ হজম তৈরি করে: অতিরিক্ত পরিমাণে ভাতের মার খাওয়ার ফলে আপনার হজম শক্তি কমে যেতে পারে এবং বদহজমের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে কারণ ভাতের মাড় একটি ভারী খাবার যা ধীরে ধীরে হজম হয় যা থেকে বদ হজম তৈরি হতে পারে এবং তা থেকে আবার গ্যাস্ট্রিকও তৈরি হতে পারে তাই  অতিরিক্ত পরিমানে ভাতের মাড় খাওয়া হতে বিরত থাকুন।
  • ত্বকে ব্যবহারে সমস্যা: অতিরিক্ত সংবেদনশীল ত্বকে মাড় ব্যবহারের কারণে জ্বালাপোড়া বা এলার্জি তৈরি হতে পারে। এছাড়াও খুব ঘনঘন মুখে মাড় মাখলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে ব্রণ বৃদ্ধি পেতে পারে।

ভাতের মাড়ের উপকারিতা

ভাতের মাড়ের কিছু অসাধারণ উপকারিতা ও গুনাগুন রয়েছে যা আপনার জন্য জেনে রাখা খুবই জরুরী। আপনাদের অবশ্যই মনে রাখা উচিত এটির যে শুধু পানীয় বা খাবার হিসাবেই উপকারিতা রয়েছে তা নয় বরং এটি ব্যবহারের ফলে ত্বক, চুল স্বাস্থ্য ও গৃহস্থলীর কাজেও রয়েছে অসাধারণ উপকারিতা। তাই ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা এর অংশ হিসাবে ভাতের মাড়ের উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক। 
  • ভাতের মাড়ে রয়েছে ভিটামিন বি যা মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র কে ভালো রাখে এবং মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করে। 
  • ভাতের মাড়ে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট যা শরীরের তাৎক্ষণিক শক্তির যোগান দেয়।
  • ভাতের মাড়ে থাকা পানি শরীরকে হাইড্রেট রাখে যার ফলে এটি পানি শূন্যতাকে দূর করে।
  • ভাতের মাড় হৃদপিণ্ডের জন্য যথেষ্ট উপকারী। এছাড়াও এতে হালকা লবণ মিশিয়ে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • ভাতের মাড় খালি পেটে খেলে এসিডিটি ও পেটের জ্বালাপোড়া কমায়।
  • ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং গরমকালে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে যথেষ্ট কার্যকারী ভূমিকা রাখে।
  • ভাতের মাড়ে ক্যালসিয়াম ও খনিজ থাকায় এটি হাড় ও দাঁত কে মজবুত করে।
  • এটিকে হালকা সুপের মতো করে খেলে শরীরে তৃপ্তি আসে এবং হালকা ক্ষুধা মিটায়।
  • ভাতের মাড় ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক অনেক উজ্জ্বল দেখায়।
  • ভাতের মাড় চুলে ব্যবহার ফলে এটি কন্ডিশনার এর মত কাজ করে অর্থাৎ রুক্ষ চুল মসৃণ হয়।
  • এছাড়াও ভাতের মাড় স্কিনের টোনার হিসেবে কাজ করে। এটিকে যদি তুলো দিয়ে মুখে হালকা করে লাগানো হয় তবে ত্বক নরম তুলতুলে হয়।
  • পায়ের ফাটা গোড়ালি সারাতে ভাতের মাড় খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 
  • ভাতের মাড় বাসন মাজা বা ঝকঝকে করতে প্রাকৃতিক ক্লিনার হিসেবে কাজ করে।

ভাতের মাড় খেলে কি হয়

ভাতের মাড়ে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ ও এন্টি-অক্সিডেন্ট যা আপনার দেহে শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করে, হজমের সমস্যা দূর করে, পানি শূন্যতা দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ত্বক ও চুলের যত্নে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা জানানোর এ পর্যায়ে ভাতের মাড় খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আপনাদের কাছে বিস্তারিত বর্ণনা করছি। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা নিয়মিত দুই গ্লাস করে ভাতের মাড় খাওয়ার অভ্যাস করেন তাদের বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটে ফলস্বরূপ স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠকাঠিন্যের উপশম হওয়া শুরু করে। 
  • দেহে শক্তির স্বল্পতা দূর করে: ব্যায়াম বা শরীর চর্চার আগে এক গ্লাস ভাতের মাড় খেলে দেহে ৮টি উপকারী অ্যামিনো এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা এক্সারসাইজ বা ব্যায়ামের সময় পেশীর গঠনে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও ভাতের মারে থাকা কার্বোহাইড্রেট এনার্জির ঘাটতি দূর করতেও সাহায্য করে।
  • হজমের সমস্যা দূর করে: ভাতের মাড় হজমের সমস্যাকে দূর করতেও সহায়তা করে থাকে।
  • ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানা কমায়: ভাতের মাড় ডায়রিয়া এবং পাতলা পায়খানা কমাতে সাহায্য করে এবং উপকারী খনিজের মাত্রা বৃদ্ধি করে।

ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম

ভাত রান্না করার শুরুতে প্রথম যে মাড় উঠে তা ফেলে দিতে হবে কারণ এটিতে ময়লা থাকতে পারে। এরপর ভাত সিদ্ধ হয়ে গেলে উপরের দিকের ঘন মাড় আলাদা করে নিতে হবে। আপনি চাইলে এই মাড় হালকা গরম অবস্থায় খেতে পারেন। একজন সাধারন মানুষের জন্য ২৪ ঘন্টায় হাফ কাপ থেকে ১ কাপ মাড় খাওয়ার যথেষ্ট হবে এর বেশি খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।

ভাতের মাড় যে কোন সময়ই খাওয়া যেতে পারে তবে এটি সকালে বা দুপুরের খাওয়া বেশি ভালো। আর অসুস্থ বা দুর্বল অবস্থায় খেতে চাইলে খাবারের মাঝামাঝি সময় খাওয়া বেশি উপকারী হবে। তবে এটি খালি পেটে খেলে শরীর দ্রুত পায়।

শুধুমাত্র ভাতের মাড়ের স্বাদ পছন্দ না হলে এর সাথে এক্সট্রা বা অতিরিক্ত স্বাদ পেতে অল্প পরিমাণ লবণ যোগ করতে পারেন। এছাড়াও ভাতের মাড়ের সাথে চিনি যোগ করে খেতে পারেন অথবা লেবুর রস দিয়েও খেতে পারেন। আবার ভিন্ন স্বাদ নিয়ে আসতে এর সাথে জিরা গুড়ো মিশিয়েও খেতে পারেন।

ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়

ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় এর উত্তরে বলা যায় হ্যাঁ ভাতের মাড় খেলে মোটা হয় অর্থাৎ ভাতের মাড় যদি অতিরিক্ত পরিমানে খাওয়া হয় তবে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তবে এই বিষয়টি কিছু কারণের নির্ভর করে। তাই চলুন এই পর্যায়ে জেনে নেওয়া যাক কেন ভাতের মাড় খেয়ে ওজন বাড়তে পারে। 
  • ভাতের মাড় খুব সহজে হজম হয় এটি খুব দ্রুত হজম হওয়ায় শরীরে ক্যালরি শোষণ দ্রুত হয়। ফলস্বরূপ অতিরিক্ত ভাতের মাড় খেলে ক্যালরি বেড়ে যায়।
  • ভাতের মাড়ে উচ্চ কার্বোহাইড্রেট থাকে। এতে প্রচুর স্ট্রাচ থাকে যা শরীরের দ্রুত গ্লুকোজে পরিণত হয় তাই অতিরিক্ত পরিমাণে ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে দেহে চর্বি জমার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • ভাতের মাড় পেট ভরায় না। যেহেতু ভাতের মাড় খুব পাতলা হওয়ার কারণে পেট ভরে থাকে না সেহেতু  মানুষ অতিরিক্ত খাবার খেতে পারে অর্থাৎ একই সাথে ভাতের মাড় আবার অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
তাই এখন প্রশ্ন দাঁড়ায় তাহলে কি ভাতের মাড় খেয়ে সবাই মোটা হবে এর উত্তর হবে না অর্থাৎ ভাতের মাড় খেয়ে সবাই মোটা হবে না। এটি যদি কম পরিমাণে খাওয়া হয় এবং শারীরিক পরিশ্রম বেশি করা হয় তবে সাধারণত মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়

ভাতের মাড় চুলে দিলে চুল শক্তিশালী ও উজ্জ্বল হয় কারণ ভাতের মাড়ে রয়েছে অ্যামিনো এসিড এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন যা আপনার চুলকে মজবুত করে এবং চুলের ভঙ্গুরতা কমিয়ে আনে। এছাড়াও এটি চুলের ফলিকলকে অটুট রেখে চুল পড়া বন্ধ করে এবং চুলকে নরম মোলায়েম ও ঝলমলে করে তোলে। ভাতের মাড় মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে চুলকে রাখে জীবন্ত সতেজ। ভাতের মাড়ে রয়েছে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ই যা আপনার চুলকে নরম মোলায়েম ও আকর্ষণীয় ঝলমলে করে তুলে রাখে প্রাণবন্ত।

ভাতের মাড় চুলে যেকোনো দিন যেকোনো সময় ব্যবহার করতে পারেন তবে অন্তত সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করতে পারলেও ভালো হয়। তবে মনে রাখবেন শ্যাম্পু ব্যবহারের পাশাপাশি এটি ব্যবহার করতে হবে। চুলে প্রয়োগের জন্য ভাতের মাড় দিয়ে প্যাক তৈরি করতে চাইলে মাড় কুসুম গরম থাকা অবস্থায় করতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন প্যাক তৈরীর সময় গরম মাড় ব্যবহার করলেও তা ঠান্ডা করে নেওয়ার পর চুলে লাগাবেন এবং ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর চুল খুব ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।

চুলে ভাতের মাড় দেওয়ার নিয়ম

চুলে ভাতের মাড় দেওয়ার কয়েকটি নিয়ম রয়েছে যা আপনি ভিন্নভাবে প্রয়োগ করতে পারেন। যেমন এটি সরাসরি প্রয়োগ করতে পারেন আবার ভাতের মাড়ের সাথে অ্যালোভেরা বা আলুর রস মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আপনি স্প্রে বোতলে ভরেও ব্যবহার করতে পারেন বা চুলে স্প্রে করতে পারেন।

আপনি যদি স্প্রে বোতলের সাহায্যে প্রয়োগ করতে চান তবে মাড় ঠান্ডা করে নিয়ে চুলে স্প্রে করে একটি চিরুনি নিয়ে চুল আঁচড়িয়ে নিলেই হবে তবে অবশ্যই চুলে আগে শ্যাম্পু করে নিবেন এরপর ঠান্ডা নরমাল পানি দ্বারা চুল ভালো করে ধুয়ে নিবেন। আপনি যদি ভাতের মাড়কে সরাসরি চুলে লাগাতে চান তবে চুলে শ্যাম্পু করার পর ঠান্ডা ভাতের মাড় চুলে ও মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন এবং অন্তত বিশ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এই পদ্ধতিটি সপ্তাহে অন্তত তিনদিন করতে পারেন।

আপনি যদি প্রাণবন্ত ঝলমলে উজ্জ্বল চুল পেতে চান তবে একটি মাঝারি আকারের কলা ও একটি পেঁয়াজ বেঁটে নিন এরপর এতে এক কাপ কুসুম গরম মাড়  যুক্ত করে দিন। এইভাবে একটি প্যাক তৈরি করে আপনার মাথার চুলে ও মাথার ত্বকে লাগিয়ে ফেলুন কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর নরমাল পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।

আপনি যদি খুশকি মুক্ত চুল পেতে চান তবে এক কাপ কুসুম গরম মাড়ের সাথে সামান্য মেন্থল আর কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মাখিয়ে নিন এবং এটি মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে প্রয়োগ করুন এতে আপনি খুশকি থেকে খুব সহজেই  মুক্তি পাবেন। আশা করছি ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। 

ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কিত পোস্টের এই পর্যায়ে আমরা জেনে নিবো ভাতের মাড় মুখে দিলে কি হয় ও ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম কি ? আমরা রূপচর্চা মানে আধুনিক প্রসাধনীকেই বুঝি কিন্তু আমাদের হাতের নাগালে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা দিয়ে আমরা খুব সহজেই আমাদের রূপচর্চা করতে পারি তেমনি একটি উপাদান হচ্ছে ভাতের মাড়। ভাতের মাড় মুখে লাগালে মুখের ত্বক উজ্জ্বল, নরম হয় ও ব্রণের সমস্যা দূর করে এবং রোদে পোড়া ভাব কমিয়ে আনে। এ পর্যায়ে আমরা জেনে নিবো ত্বকের যত্নে ভাতের মাড়ের কিছু সহজ পদ্ধতি।
  • ত্বকের দাগ ছোপ দূর করতে: আপনার ত্বকের যেকোনো ধরনের দাগ ছোপ ও মেছতার দাগ কমাতে গরম ভাতের মাড়ে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন এবং এইভাবে একটি প্যাক তৈরি করুন। এরপর এটিকে ঠান্ডা করে আপনার মুখের স্কিনে প্রয়োগ করুন বেশ কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • মুখের ত্বক প্রানবন্ত ও উজ্জ্বল করতে: প্রথমে এক টেবিল চামচ পরিমাণ আলুর রস তৈরি করুন এবং এর সাথে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ ভাতের মাড়ের সাথে পরিমাণ মতো বেসন যোগ করে একটি প্যাক তৈরি করুন। এরপর এই প্যাকটি মুখে প্রয়োগ করে কিছুক্ষণ রেখে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল প্রাণবন্ত এবং একটি গ্লো তৈরি করবে। 
  • ব্রণ দূর করতে: তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য পুদিনা পাতার রস তুলসী পাতার রস মুলতানি মাটি এবং গরম মাড় এই প্রত্যেকটি উপাদান এক চামচ করে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এরপর এটি মুখের ত্বকে প্রয়োগ করুন। আপনার মুখের ব্রণ দূর করতে দারুন কাজ করবে।
  • ব্রণের গোটা দূর করতে: ব্রণের গোটা জায়গা গুলোতে অন্য একটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য ৫ থেকে ৬টি লবঙ্গ গরম মাড়ে ফেলে দিন এরপর দশ মিনিট পরে সেই লবঙ্গ গুলোকে তুলে ব্লেন্ডার বা পাটায় বেটে ব্লেন্ড করে ব্রনের গোটার উপর লাগিয়ে দিন।
  • অতি সংবেদনশীল ত্বকের যত্নে: আপনার মুখের ত্বক যদি অতি সমবেদনশীল হয়ে থাকে তবে তেজপাতা গুড়ো করে এতে পরিমাণ ভাতের মাড় নিলেই তৈরি হয়ে যাবে অতি সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক।

এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যর জন্য। এটি কোন ওষুধ বা চিকিৎসার অংশ নয় এবং এটি ডাক্তার এর প্রেসক্রিপশন বা পরামর্শের বিকল্পও হিসাবে কাজ করবে না। তাই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তথ্য ব্যবহারজনিত কোন ক্ষয়-ক্ষতির জন্য লেখক বা ওয়েবসাইট কোনভাবেই দায়ী নয়।

শেষকথাঃ ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ব্যবহার ও উপকারিতা

প্রিয় পাঠক, ভাতের মাড়কে আমরা অপ্রয়োজনীয় মনে করে ফেলে দেই কিন্তু এর রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা। যদি যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে এটি ব্যবহার করা হয় তবে এটি আমাদের শারীরিক সুস্থতা এনে দিতে পারে কিন্তু অপরপক্ষে যদি এটির অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয় তবে এটি ক্ষতিরও কারণ হতে পারে। তাই আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ভাতের মাড়ের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়েছেন বলে আমরা আশা করি। 

এইরকম স্বাস্থ্য সম্পর্কিত উপকারী আর্টিকেল পড়তে আমাদের পেজটি এখনই সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন। আমাদের সম্পর্কে কোন মূল্যবান মন্তব্য পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কমেন্টসে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগ টু বাজারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

Md. Abu Saleh
Md. Abu Saleh
আমি একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট আমি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করি।